চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলাকে দ্বিতীয়বারের মতো বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজাহার আলী।
আমার উপজেলা, আমার দায়িত্ব; শিশুর জীবন হোক বাল্যবিবাহমুক্ত — এ স্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। এ উদ্যোগে সহযোগিতা করে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের স্ট্রেংদেনিং সোশ্যাল অ্যান্ড বিহেভিয়ার চেঞ্জ প্রকল্প।
শিবগঞ্জ উপজেলাকে প্রথমবার ২০১৭ সালে প্রয়াত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করেছিলেন। সে সময় উপজেলা স্টেডিয়ামে ঢাকঢোল বাজিয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় নায়িকা অপু বিশ্বাস এবং গায়িকা মমতাজ। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ—সেই ঘোষণার পর উল্টো এলাকায় বাল্যবিবাহের প্রবণতা বেড়ে যায়।
শিবগঞ্জের স্থানীয় সচেতন ব্যক্তি আব্দুল খালেক বলেন, বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা ঘোষণা মানে এই নয় যে বাল্যবিবাহ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। বাস্তবে এখনো রাতের অন্ধকারে অনেক বিয়ে হচ্ছে। সচেতনতা না বাড়ালে এবং আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ না করলে এ প্রবণতা কমানো সম্ভব নয়।
সচেতন মহলের অভিমতও প্রায় একই—কেবল ঘোষণার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তারা মনে করেন, প্রথম ঘোষণার পরও বাল্যবিবাহ বেড়েছিল। তাই নতুন করে ঘোষণা দিলেই সমাধান আসবে না। বরং আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিই মূল হাতিয়ার হওয়া উচিত।
ইউএনও আজাহার আলী বলেন, প্রথম দফার ঘোষণার পরও কিছু বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসন আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী এ বারও শিবগঞ্জ উপজেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করা হলো।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা—শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজের সর্বস্তরের অংশগ্রহণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে শিবগঞ্জ উপজেলাকে সত্যিকার অর্থেই বাল্যবিবাহমুক্ত করা হবে।