ইমন সরকার, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের ভালুকায় আরিফ স্পিনিং মিলের ওয়াশরুম থেকে রবিউল ইসলাম (৪৫) নামে এক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করেছে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় অবস্থিত আরিফ স্পিনিং মিলে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত রবিউল ইসলাম নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার মেগশিমুল গ্রামের মৃত রইজ উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, সন্ধ্যার পর মিলের ওয়াশরুম ভেতর থেকে লক করা অবস্থায় থাকতে দেখে সহকর্মীরা বিষয়টি টের পান। ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়া না পেয়ে তারা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে রবিউল ইসলামকে অচেতন অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সহকর্মীদের ভাষ্যমতে তারা বলেন, ওয়াশরুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। আমরা অনেকবার ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পাইনি। পরে দরজা ভেঙে দেখি রবিউল ভাই পড়ে আছেন অচেতন অবস্থায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার বলেন, তিনি আগেই মারা গেছেন।
এদিকে, রবিউলের গলায় আঘাতের দাগ ও জিব্বা বের হয়ে থাকার বিষয়টি দেখে তাঁর পরিবার দাবি করছে, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
নিহতের ছেলে বলেন, “আমার বাবার গলায় স্পষ্ট দাগ ছিল, জিব্বা বের হয়ে ছিল। স্বাভাবিক মৃত্যুতে এমন হয় না। বাবার কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। তবে তিনি কিছুদিন ধরে ধারদেনা পরিশোধ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। শুক্রবারে বাড়িতে গিয়েছিলেন জমি বিক্রি করার জন্য, যাতে ধার শোধ করতে পারেন। কিন্তু আজ অফিসে গিয়ে এমনভাবে মারা গেলেন এটা আমরা মানতে পারছি না।”
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, অফিসে কোনো আর্থিক চাপ বা জটিলতা থেকে রবিউল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তাঁরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রবিউল ইসলাম আত্মহত্যা করেছেন। তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।