ইমন সরকার, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানার শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস (২৭)-কে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার নৃশংস ঘটনা কেবল একটি হত্যাকাণ্ড নয়; এটি বাংলাদেশের শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক নিরাপত্তা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে ভয়াবহ প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
ধর্ম অবমাননা ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে নেমে আসে ক্ষোভ, শোক ও আতঙ্ক। তবে ঘটনার গভীরে যেতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য, যা এই হত্যাকে কেবল ‘হঠাৎ উত্তেজিত জনতার কাজ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা কঠিন করে তুলছে।
১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের ডুবালিয়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানার ভেতরে হঠাৎ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
কারখানার একাধিক শ্রমিক জানান, তিনজন সহকর্মীর মধ্যে কথোপকথনের সময় পাশ থেকে দীপু চন্দ্র দাস কথিতভাবে একটি মন্তব্য করেন, যেটিকে ‘ধর্ম নিয়ে কটূক্তি’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। মুহূর্তেই বিষয়টি ফ্লোরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেননি দীপু আসলে কী বলেছিলেন। এখানেই শুরু হয় প্রথম বড় প্রশ্ন যে অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মানুষকে হত্যা করা হলো, সেই অভিযোগের কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী কেন পাওয়া যাচ্ছে না?
নিহত দীপু চন্দ্র দাস তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান দীপু গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জুনিয়র কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর হিসেবে পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস কারখানায় যোগ দেন।
পরিবার ও সহকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, দীপু ছিলেন মেধাবী ও পরিশ্রমী। সম্প্রতি তিনি সুপারভাইজার পদে উন্নীত হওয়ার জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এই পদোন্নতিকে ঘিরেই কারখানার ভেতরে তার সঙ্গে কয়েকজন সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরোধ তৈরি হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
কারখানার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে বাইরে থেকে একদল লোক ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা পকেট গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে দীপু চন্দ্র দাসকে জোরপূর্বক বের করে নিয়ে যায়।
সবচেয়ে রহস্যজনক বিষয় হলো কারখানার ভেতরের একটি কথিত মন্তব্যের খবর এত অল্প সময়ের মধ্যে বাইরে থাকা হাজারো মানুষের কাছে কীভাবে পৌঁছাল?
কারখানার জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) উদয় হোসেন বলেন, “সেদিন মাগরিবের নামাজের আগমুহূর্তে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক কথা বলা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে পুরো ফ্লোরে উত্তেজনা ছড়িয়ে যায়। এ সময় সবাইকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করা হয়। সবাইকে স্বাভাবিক করতে মিথ্যা একটি রিজাইন পেপারে সিগনেচার নেওয়া হয়। বিষয়টি বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় শিল্প পুলিশ ও থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানাই।”
উদয় হোসেন দাবি করেন, “দীপুকে বাইরে বের করে দেওয়া হয়েছে, বিষয়টা এমন নয়। বিষয়টা হচ্ছে, পুরো ফ্লোরে হট্টগোল শুরু হয়ে গেলে তাকে নিরাপদে গেটে নিয়ে যাই বের করে দেওয়ার জন্য, যাতে সে নিরাপদে বাইরে বের হয়ে যেতে পারে। যখন বাইরের লোকজন চলে যাবে, পরিস্থিতি নরমাল হবে, সে বাসায় চলে যাবে। পরিস্থিতি এমন হইছিল যে তাকে বের করার মতো পরিস্থিতি ছিল না, আমরা তাকে বেরও করি নাই। কিন্তু একপর্যায়ে বাইরের উত্তপ্ত জনতা পকেট গেট ভেঙে তাকে বের করে নিয়ে যায়। আমাদের কোনো কিছু করার ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “বাইরের লোক কীভাবে জানল, জানি না। সবার হাতে মোবাইল, প্রযুক্তি থাকার কারণে সেকেন্ডর মধ্যেই একটা জিনিস ছড়িয়ে যায়। কোনোভাবে হয়তো বাইরে ছড়িয়ে গেছে।”
শিল্প পুলিশ-৫ ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসাইন খান বলেন, “আমরা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে খবর পাই। ততক্ষণে রাস্তায় ৮ থেকে ১০ হাজার লোক জড়ো হয়ে যায়। যানজট ঠেলে পৌঁছানোর আগেই শ্রমিককে নিয়ে যায়। আমাদের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছিল, শ্রমিককে যেন বাইরে না দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের ফোর্স সাড়ে আটটার দিকে ওখানে যাওয়ার আগেই শ্রমিককে জনগণের হাতে দিয়ে দেয়। তখনই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনা শুরুর সময় কর্তৃপক্ষ ভেতরে মিটমাটের চেষ্টা করেছিল, আগে আমাদের জানায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “কারখানার ভেতরের ঘটনা বাইরে ছড়িয়েছে ভেতর থেকেই, তা না হলে বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। ওই জায়গায় কারখানা কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। যখন বাইরের লোকজন গিয়ে গেট ভাঙার চেষ্টা করেন, তখনই কারখানা রক্ষা করতে গিয়ে শ্রমিককে লোকজনের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়।”
কারখানা থেকে দীপুকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে আনা হয়। এরপর প্রায় এক কিলোমিটার পথ ধরে তাকে মারধর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সে সময় দীপু পায়ে ধরে ক্ষমা চাইছিলেন।
শেষ পর্যন্ত তাকে নেওয়া হয় স্কয়ার মাস্টারবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে, ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাঝখানে থাকা একটি গাছের কাছে। সেখানে রশি দিয়ে বেঁধে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে এখনো ঝুলছে সেই রশি—যা নীরব সাক্ষ্য বহন করছে এক ভয়াবহ মব জাস্টিসের।
হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে নেমে আসে তীব্র প্রতিক্রিয়া। মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী, শ্রমিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ এই ঘটনাকে “মধ্যযুগীয় বর্বরতা” হিসেবে আখ্যা দেন।
ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকশ মানুষ নির্বিকারভাবে দাঁড়িয়ে আছে, কেউ কেউ স্লোগান দিচ্ছে, আর একজন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে।
এই দৃশ্য নতুন করে প্রশ্ন তোলে এই সমাজ কি ধীরে ধীরে সহিংসতার প্রতি অসাড় হয়ে পড়ছে?
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ও র্যাব এখন পর্যন্ত ধর্ম অবমাননার কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ পায়নি।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “ধর্ম অবমাননার তথ্য পেলেও সবই মুখে শোনা। ধর্ম নিয়ে কটূক্তির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত কোনও সত্যতা পুলিশ এখনও পায়নি।”
তিনি বলেন, “মব সৃষ্টি করে হত্যা, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। কেন ওই যুবককে পুলিশের হাতে না দিয়ে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া কারখানায় কোনও দ্বন্দ্ব রয়েছে কিনা সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, “ভিডিও ফুটেজ দেখে ইতোমধ্যে র্যাব ও পুলিশ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”
সময়মতো খবর পেলে বাঁচানো যেত উল্লেখ করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার সূত্রপাত যখন, তখন পুলিশে খবর দিলে শ্রমিককে উদ্ধার করা যেত। কিন্তু তাঁদের শেষ মুহূর্তে খবর দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
সম্প্রতি এ ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতারের পর একটি সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব। ময়মনসিংহ র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার মো. সামসুজ্জামান জানান, “এ ঘটনায় ‘ধর্ম অবমাননার’ কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নিহত ব্যক্তি যদি ফেসবুকে কিছু লিখতেন তাহলেও একটা বিষয় হতো। সেখানে সবাই এখন বলছেন তারা তাকে (নিহত শ্রমিক) এমন কিছু বলতে নিজেরা শোনেননি। কেউ নিজে শুনেছেন বা দেখেছেন (ধর্ম অবমাননার বিষয়ে) এমন কাউকে পাওয়া যায়নি।”।”
নিহত দিপুর ভাই অপু রবি দাস বলেন, “দিপু ফ্লোর ম্যানেজার থেকে সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছিল। ঘটনার দিন বিকালে পদ-পদবি নিয়ে দিপুর সঙ্গে অফিসের বেশ কয়েকজন সহকর্মীর ঝামেলা হয়। ওই দিন তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে মারতে মারতে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েও আমার ভাই রক্ষা পায়নি।”
তিনি বলেন, “ঘটনার দিন আমার ভাইয়ের বন্ধু হিমেল ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, তোমার ভাই মহানবীকে (সা.) নিয়ে খারাপ কথা বলায় তাকে থানায় দেওয়া হয়েছে। এ কথা শুনে আমি দৌড়ে বাসা থেকে বের হই। একটু পর আবার ফোন করে জানায়- সে মারা গেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ভাইয়ের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে অপু বলেন, “ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। তার কোনও অপরাধ থাকলে পুলিশে দিতে পারতো। এতো নির্মমভাবে মানুষ মানুষকে মারে?”
তিনি বলেন, “কারখানার লোকরা চাইলে ভাইকে বাঁচাতে পারতো। তাদের গাফলতির কারণে ভাইয়ের এই পরিণতি। সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে ভাই হত্যার বিচার চাই।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও একই অভিযোগ তুলছেন। তাঁদের মতে, কারখানার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পদোন্নতি ও শ্রমিক অধিকার সংক্রান্ত বিরোধই ছিল এই হত্যার মূল কারণ।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই অপু রবি দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। র্যাব ও পুলিশের অভিযানে এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বাকি অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হচ্ছে।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে ১৯ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনও স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না
এদিকে গতকাল রোববার বেলা দুইটার দিকে ‘গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনসমূহ’ ব্যানারে কারখানাটির সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি এক কিলোমিটার দূরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। ব্যানারে লেখা ছিল, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’। দীপু চন্দ্র দাসের হত্যার বিচার চাই। দীপু চন্দ্র দাসের পরিবারকে একজীবনের আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সমাবেশে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জলি তালুকদার বলেন, যারা মব করে দীপুকে পিটিয়ে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিতে হবে। কমিউনিস্ট পার্টির ময়মনসিংহের সভাপতি এমদাদুল হক মিল্লাত বলেন, দীপু হত্যার ঘটনাটি মানব ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের সবার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে গার্মেন্টস ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ, গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের নেত্রী তসলিমা আক্তার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ বিষয়ে কারখানার জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) উদয় হোসেন বলেন, আমরা এ ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার চাই। আমাদের দিক থেকে যত প্রকার সহযোগিতা দরকার, আমরা সেটা করব। যে–ই দোষী হবে, সে–ই বিচারের আওতায় আসবে। এখানে আমাদের কোনো প্রকার কম্প্রোমাইজ নাই। নিহতের পরিবারকে আমাদের পক্ষ থেকে সব রকমের সহযোগিতা করা হবে।
বাইরে বের করে দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দিপু চন্দ্র দাসকে জোর করে বের করা হয়নি; বরং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাকে নিরাপদে বাসায় পাঠানোর উদ্দেশ্যেই গেটের দিকে নেওয়া হয়েছিল। তবে একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা পকেট গেট ভেঙে তাকে বাইরে নিয়ে যায়।
ভালুকার এই হত্যাকাণ্ড কেবল একজন শ্রমিকের মৃত্যু নয়; এটি রাষ্ট্র, সমাজ ও শিল্প ব্যবস্থার জন্য এক ভয়াবহ সতর্কবার্তা। অভিযোগ প্রমাণের আগেই বিচার, আর বিচারের আগেই মৃত্যু এই চক্র চলতে থাকলে আইনের শাসন প্রশ্নের মুখে পড়বে বারবার।
দীপু চন্দ্র দাসের মৃত্যু আজ একটি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দেশে একজন শ্রমিকের জীবনের মূল্য কতটুকু?


