আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলায় স্কুলঘর ভেঙে বিক্রির চেষ্টা করেছেন প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি টের পেয়ে আটকে দিয়েছে এলাকাবাসী। গত রোববার ঘটনাটি ঘটেছে ভৈষতুলিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিস্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্কুলের জমিদাতা।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি স্কুলে একটি দোতলা ভবণ নির্মাণ করা হয়। সেখানে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। আগের একটি টিনশেডের শ্রেণিকক্ষ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। কয়েকদিন আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম গোপনে ওই কক্ষের মেঝেতে বিছানো ইট সরিয়ে পাশের এক বাড়িতে রাখেন। রোববার সকাল ১০টায় ঘরটি ভেঙে বিক্রির চেষ্টা করেন। এলাকাবাসী জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তা আটকে দেন। পরে স্কুলের জমিদাতা আবু তালেব ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
জমিদাতা আবু তালেব মিয়া বলেন, সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। ২০২৪ সালে তিনি স্কুলের ক্ষুদ্র মেরামতের ১ লাখ ৫০ হাজার, দুই দফায় স্লিপ বরাদ্দের ৫৮ হাজার টাকা, ৮ ফুট দৈর্ঘ্যের ২৮ পিস ঢেউটিন, পুরাতন কাঠ, বাঁশ ও শ্রেণি কক্ষের মেঝের চার হাজার পাঁচশ ইট বিক্রি করে আত্মসাৎ করেন। সে সময় তাঁর বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল রব্বানী সজিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সজীব বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শহিদুল ইসলাম নানা অনিয়ম করে আসছেন। কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁর অপকর্ম বন্ধ হয়নি। স্কুলের স্বার্থে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল মিথ্যা অভিযোগ করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অথচ ঘরটি সরকারিভাবে নিলাম দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন; যা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া ঘরটির পেছনে কিছু কৃষিজমি থাকায় জমির মালিকদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল। সে কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মৌখিক অনুমতি নিয়ে ঘরটি ভাঙা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ বলেন, ঘর ভেঙে বিক্রির বিষয়ে তিনি কাউকে কোনো অনুমতি দেননি। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক কোনোভাবে ঘরটি ভাঙতে পারেন না। এটি সরকারি নিয়ম মেনে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।