সৈয়দ মিয়া (জেলা প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম) :
চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের স্বপ্নের ফেরি সার্ভিস বন্ধের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ২২ এপ্রিল সকাল ১১টায় সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আমরা সন্দ্বীপবাসী’ ব্যানারে বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
‘আমরা সন্দ্বীপবাসী’ সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেয় একাধিক সংগঠন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সকলের একটাই দাবী—বৈরি আবহাওয়া ছাড়া অন্য কোনো অজুহাতে এই গুরুত্বপূর্ণ ফেরি সার্ভিস বন্ধ করা চলবে না। বক্তারা ফেরি সার্ভিসের পাশাপাশি সি-ট্রাক চালুরও জোর দাবি জানান।
সন্দ্বীপ উপজেলা চত্বরে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর আলাউদ্দীন শিকদার, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন ঠাকুর, যুগ্ম আহ্বায়ক আজমত আলী বাহাদুর, মনির তালুকদার, কাসেম মাস্টার, জামায়াত নেতা মাওলানা আবু তাহের, অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় সভাপতিত্ব করেন যুবদল নেতা নিঝুম খান এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন।
চলতি বছরের ২৪ মার্চ ‘কপোতাক্ষ’ নামক ফেরির মাধ্যমে সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ নৌপথে আনুষ্ঠানিক যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। উদ্বোধনী দিনে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুছ, যিনি এ নৌরুটের অব্যবস্থাপনাকে “চট্টগ্রামবাসীর জন্য লজ্জাজনক” বলে আখ্যা দেন। সরেজমিনে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, যিনি পাঁচ উপদেষ্টার সঙ্গে ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করেন। সন্দ্বীপবাসী এই উদ্যোগের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও রেল উপদেষ্টা ফাউজুল কবির খানকে প্রকৃত নায়ক হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তবে হঠাৎ করেই বিআইডব্লিউটিসি ২৩ এপ্রিল থেকে ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দেয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান উল্লেখ করেন, আসন্ন বর্ষা ও উত্তাল সমুদ্রের কারণে ফেরিঘাটের পন্টুনসমূহ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এই ঘোষণায় দেশ-বিদেশে থাকা প্রায় পাঁচ লক্ষ সন্দ্বীপবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারা এই সিদ্ধান্তকে “সিন্ডিকেট চালিত ষড়যন্ত্র” আখ্যা দিয়ে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল কখনোই চাননি সন্দ্বীপের যাতায়াত ব্যবস্থা নিরাপদ হোক।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হলে সন্দ্বীপবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে।