ইবি প্রতিনিধি :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে দোকানে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুর একটার দিকে অনুষদভবন সংলগ্ন আব্দুল আহাদের দোকানে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেনÑ ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী উল্লাস মাহমুদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন। তারা উভয়ই শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের অনুসারী বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুল আহাদ বিকেল ৪টার দিকে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান।
লিখিত অভিযোগে আহাদ বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দোকান করি। কয়েকদিন আগে ছাত্রদলের উল্লাস মাহমুদ আমাকে দোকান বন্ধ করতে বলেন। তার কথামতো দোকান বন্ধ না করায় শনিবার (০৫ জুলাই) দুপুর একটার দিকে উল্লাস ও সাব্বির দোকানে এসে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় আমি ব্যবসায়িক কাজে অনিরাপদ বোধ করছি।
দোকানি আব্দুল আহাদ বলেন, তারা একদিন আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন— ‘আমি দোকানদারি করবো নাকি ছেড়ে দিবো?’ আমি দোকানদারি করতে চাইলে সেদিন আর কিছু বলেনি। পরে শনিবার ছাত্রদলের উল্লাস ভাই আর সাব্বির ভাই আমাকে দোকানের বাইরে ডেকে নিয়ে বলে, ‘তোমাকে এর আগে একবার বলেছিলাম। আজকে আবার বলছি, কিছু টাকাপয়সা দেও। দেও বলতে বড় ভাই আসেবেনে তারে দিবা। আমি বলে দিবানে। তোমার কোনো সমস্যা হইলে আমরা দেখবো। আজকে শনিবার, বুধবারের মধ্যে টাকা দিবা। বড় ভাই আসবেনে, তুমি খুশি হয়ে কিছু দিবা।’
তিনি বলেন, আমি প্রশাসনের কাছ থেকে দোকান নিয়েছি। তাদের কাছে টাকা দেব কেন? এই ঘটনার পর আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন বলেন, আমি আহাদের দোকানেই যাইনি। সকালে ক্যাম্পাসে গিয়ে আলমগীর ভাইয়ের দোকান থেকে চা খাওয়ার পর প্রশাসন ভবন ঘুরে ঝিনাইদহ চলে এসেছি।
আরেক অভিযুক্ত উল্লাস মাহমুদ বলেন, আমি ক্যাম্পাসে গিয়েছি তবে কোনো দোকানে যাইনি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, আমি উভয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলছে এসব কিছুই জানে না। তবে আমি স্পষ্ট বলেছি, ছাত্রদল করে চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ এমন করে থাকে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাবো।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, অফিসে অভিযোগ এসেছে কিন্তু অফিস টাইম শেষ হওয়ায় দেখার সুযোগ হয়নি। রোববার ক্যাম্পাস বন্ধ, সোমবার অফিস সময়ে দেখবো। তারপর বাকি ব্যবস্থা নেব।