মোঃ দুলাল আলী, ক্রাইম রিপোর্টার চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গণমাধ্যম কর্মীদের নাম্বার ব্ল্যাকলিস্টে রেখেছেন। অভিযোগ ইউএনও নিশাত আনজুম অনন্যার বিরুদ্ধে।
অনিয়ম-দুর্নীতি নিউজ করায় তিনি সরকারি নির্দিষ্ট মুঠোফোন নাম্বারে ব্ল্যাকলিস্টে রাখেন কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীর মুঠোফোন নাম্বার। আর এতে করে কোনো তথ্যের জন্য সরকারি ওই মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে বারবার ব্যস্ত দেখায়। ফলে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ও পেশায় বাধাগ্রস্ত সৃষ্টি হতে হচ্ছে ভুক্তভোগীগণমাধ্যমকর্মীদের।
এদিকে ইউএনও’র সরকারি নাম্বারে ব্ল্যালিস্টের এমন কর্মকাণ্ডকে বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই। জানা যায়, নিশাত আনজুম অনন্যা গোমস্তাপুর উপজেলায় নির্বাহী অফিসার হিসেবে গত ৮ নভেম্বর ২০২৩ সালে যোগদান করেন।
আওয়ামী লীগের দোষর ইউএনও নিশাত আনজুম অনন্যা দীর্ঘদিন যাবৎ গোমস্তাপুর উপজেলায় একক রাজত্ব কায়েম করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর উপজেলার অনেক দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের তথ্য না দেওয়ার জন্য অফিসের কর্মকর্তাকেও বলে রাখেন তিনি।
এছাড়াও সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ কে বাইরে বসিয়ে গোপনে মিটিং করেন তিনি। এতে সাধারণ মানুষ কে সেবা থেকে বঞ্চিত করেন নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অনন্যা। ইউএনও’র এক বার বদলীর আদেশ হলেও অজ্ঞাত কারনে তা স্থগিত হয়।
কর্মরত থাকা অবস্থায় কয়েকটি বিষয়ে দুর্নীতি রিপোর্ট জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর জনসাধারণের কাছে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এতেকরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাকে। যার ফলে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট জবাবদিহিতা করতে হয়।
একারণে ওই গণমাধ্যম কর্মীদের উপর চরম রাগান্বিত হয়ে পড়েন৷ বিষয়টি গত কয়েক মাস আগের হলেও তিনি ক্ষোভ পুষে রাখেন। আর তখন থেকেই সরকারি মুঠোফোন নম্বরের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ব্ল্যাকলিস্টে রাখেন গণমাধ্যমকর্মীর মুঠোফোন নাম্বার। যা একটি ক্ষমতার অপব্যবহারের সামিল ও অযৌক্তিক।
অপরদিকে, আস্তে আস্তে যোগাযোগ সমস্ত মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ, থেকে ব্লক করে দেন। এতে ওই গণমাধ্যম কর্মীর কোনো তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে ইউএনও’র সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক মাস যোগাযোগ থেকে বিরত থাকেন। যার কারণে অনেক সংবাদে তাঁর মন্তব্য না পাওয়ায় প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি ৷ ফলে গণমাধ্যম কর্মীরা তাদের পেশায় বাধার সম্মুখীনে পড়তে হচ্ছে।
দৈনিক রাজবার্তা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও সিনিয়র সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, তথ্যের জন্য যোগাযোগ করলে তাঁর ব্যবহৃত সরকারি মুঠোফোনে কল দিলে ব্যস্ত দেখায়। সাংবাদিকতা পেশার লোকজনদের সঙ্গে অপমানজনক একটি কাজ করেছেন তিনি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক, এটি ক্ষমতার অপব্যবহার।
এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির (সাবেক) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট, নুরুল ইসলাম সেন্টু বলেন একজন সাংবাদিক সরকারি বেসরকারিসহ সকল জায়গার তথ্য সংগ্রহ করে সংবাদ প্রকাশ করা তাদের নৈতিক অধিকার। এছাড়া সরকার থেকে ইউএনও’র একটা নাম্বার দেওয়া হয়েছে জনসাধারণের সুবিধার জন্য। কারও বিরুদ্ধে নিউজ করলে রেগে গিয়ে সেই সাংবাদিকদের নাম্বার ব্ল্যাকলিস্টে রাখবে এটা কোনো আইনের মধ্যে পড়েনা বলে মনে করি! এটা ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাকিব হাসান তরফদার বলেন, একজন ইউএনও সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গণমাধ্যম কর্মীর নাম্বার ব্লক করতে পারে না। বিষয়টি খুব দুঃখজনক, ডিসি স্যার আসলে আমি বিষয়টি আমি জানাবো।