মোঃ মাহাবুল ইসলাম মুন্না রাজশাহী :
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয়রা নদীর পানিতে ও তীরবর্তী বালুর নিচ থেকে বুদবুদ আকারে গ্যাস নির্গত হতে দেখছেন।
মঙ্গলবার পানি কমে গেলে এলাকাবাসী বুদবুদের স্থানগুলোতে দিয়াশলাই জ্বালিয়ে দেখেন, বালুর ওপরে আগুন জ্বলছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং পরদিন শত শত মানুষ গ্যাসের উৎস দেখতে নদীপাড়ে ভিড় করেন।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠান। তারা গ্যাস নির্গমনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং পরে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে অবহিত করা হয়।
শনিবার বাপেক্সের ব্যবস্থাপক (জিওলজি) এসএম নাফিফুন আরহাম, উপ-ব্যবস্থাপক ইমামুল ইসলাম এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক রাসেল কবীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইউএনও ফয়সাল আহমেদ এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলাম।
বাপেক্সের দল নদীপাড়ে গ্যাস ডিটেক্টর ব্যবহার করে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করে। তারা অন্তত অর্ধশত স্থান থেকে বুদবুদের উৎপত্তি লক্ষ্য করেন এবং তিন বোতল গ্যাস সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠান। এমনকি নদীর অপর পাড়েও নৌকাযোগে গিয়ে আরও কয়েকটি স্থানে বুদবুদের অস্তিত্ব দেখা যায়।
ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, “গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর এলাকা সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বাপেক্স পরবর্তী তদন্ত ও কার্যক্রম হাতে নেবে।”
বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দলের প্রধান এসএম নাফিফুন আরহাম বলেন, “আমরা ডিটেক্টরের মাধ্যমে মিথেন গ্যাস শনাক্ত করেছি। সংগ্রহ করা নমুনা ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে, যা নির্ধারণ করবে এটি খনিজ গ্যাস নাকি উদ্ভিদ ও মাটির পচন থেকে উৎপন্ন গ্যাস।”
তিনি আরও বলেন, “আগে এই এলাকায় কোনো ভূতাত্ত্বিক জরিপ হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হবে। যদি পর্যাপ্ত গ্যাসের মজুদ পাওয়া যায়, ভবিষ্যতে উত্তোলনের সম্ভাবনা বিবেচনা করা হবে।”
স্থানীয়দের মধ্যে গ্যাস শনাক্ত হওয়ার ঘটনায় উচ্ছ্বাস দেখা গেলেও প্রশাসন ও বাপেক্স সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকা নিরাপত্তার আওতায় এনে ভবিষ্যৎ গবেষণা ও সম্ভাব্য উত্তোলন কার্যক্রম পরিকল্পিতভাবে পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
								
							
