চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি অ্যাড. সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া বলেছেন, আজকে দেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। যে যাই বলুক না কেন, ডাকসুর এই নির্বাচন সুপরিকল্পিত নীলনকশার নির্বাচন। এখানে কাকে কত শতাংশ ভোট দেওয়া হবে, কোন হলে কত শতাংশ ভোটে কাকে বিজয়ী করা হবে, পার্থক্য কত থাকবে, তা ১/১১ মডেলে ২০০৮ সালের মতো ডাকসু, রাকসু, জাকসু, ইকসু সবগুলোর জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। এই সরকারকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, ১৫ বছর বাংলাদেশের মানুষ ভোটের অধিকার পায়নি, ভোটের জন্য যে সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও লড়াই করেছে, তার মর্যাদা দিতে পারেননি। গত ১৫ বছর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল রাজনৈতিক দল ছিল বিতাড়িত, একমাত্র ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবির ছাড়া।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের আড্ডা বাজারে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-০২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাড. আশিফা আশরাফি পাপিয়া নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
এ সময় সাবেক এমপি অ্যাড. আশিফা আশরাফি পাপিয়া বলেন, ছাত্রলীগের ভিতরে চোরাগোপ্তা হিসেবে আশ্রয় নেয় ছাত্রশিবির। কাকের বাসায় কোকিলের থাকার মতো ব্যাপার। আওয়ামী লীগের ভেতরে ঢুকে সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোকিলের মতো আশ্রয় নিয়েছিল জামায়াত। এক বছর হয়েছে এই সরকার পতনের, আ.লীগ সরকার এক বছর থেকেই নেই, তবুও একদল বলে স্থানীয় নির্বাচন, যা শুধুমাত্র জাতীয় নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রী হিসেবে বলতে চাই, ১৯৮৬ সাল থেকে রগকাটা হাত-পা কাটা ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। সেই এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এদের বর্ণচোরা রাজনীতি জনগণ বুঝতে পারেনি। ৯৬ সালেও দেখেছি কিভাবে আ.লীগের ছায়াতলে গিয়েছে। আজকে সমগ্র দেশের মানুষ ডাকসুর নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ডাকসুর এই টাইপের নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ চাই না। দেশের মানুষ চাই, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা।
বিএনপি নেত্রী পাপিয়া বলেন, বিএনপির সাথে আলোচনায় বসলে সরকার বলে নির্বাচন দিব। কিন্তু অন্য দলের সাথে বসলে কিভাবে নির্বাচন বানচাল করা যায়, তা এনসিপি ও জামায়াতকে শিখিয়ে দেয়। তখন তারা এসে, একেকটা এজেন্ডা এনে দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করে। এই সরকারকে বলতে চাই, মন পরিষ্কার করুন, খোলা আকাশের দিকে দৃষ্টি সম্প্রসারিত করুন। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে দেখুন। তাদের মুখ দেখে, অভিব্যক্তি দেখে, বুঝার চেষ্টা করুন, তারা আসলে কী চাই। তারা দেশে শান্তি চাই। তারা দেশে শান্তিপূর্ণ নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। তারা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ-রাষ্ট্র চাই।
সাবেক এমপি পাপিয়া বলেন, শুধুমাত্র গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করছে বিএনপি। নির্দলীয় এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ভোটের অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। আ.লীগ সরকারের ন্যায় এই সরকার যদি প্রশাসনে জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে তাহলে দেশের শান্ত মানুষ অশান্ত হয়ে যাবে। কিভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে তার প্রমাণ গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলন। আবু সাঈদদের রক্তের দাম স্বীকৃতি দিতে গেলে বাংলাদেশের মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। একটি দলের মুখের দিকে তাকিয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করলে আ.লীগ যে পথে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাবে সেই পথে।
গণসংযোগ ও পথসভায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মতি, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ময়েজ উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক সামিরুল ইসলাম পলাশসহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।