চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: নাদিম হোসেন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কর্ণখালি এহইয়াউল উলুম মাদ্রাসায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি এক ধরনের হযবরল অবস্থার মধ্যে চলছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসার সুপার মোঃ সাদিকুল ইসলাম স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, তিনি রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে মনগড়া ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে এককভাবে সকল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।
মাদ্রাসার শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ শামিম হোসেন বলেন, সুপার সাহেব দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করছেন। তিনি এক সময় আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে ঝামেলায় জড়ান, পরে বিএনপি-জামায়াত ঘেঁষা লোকদের সাথে ঘনিষ্ঠতা করেন। গত ৫ আগস্টের পর তিনি প্রায় এক মাস মাদ্রাসায় আসেননি। এরপর মনগড়া সভাপতি নিয়োগ দিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, আম বাগান বিক্রির বিষয়ে কোনো রেজুলেশন হয়নি। সুপার এবং সভাপতি মিলে জোরপূর্বক বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ।
সিনিয়র শিক্ষক আকবর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সুপার মোঃ সাদিকুল ইসলাম ম্যানেজিং কমিটিতে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবাকে সদস্য করেছেন, যিনি শিক্ষাব্যবস্থা বা প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা কিছুই রাখেন না। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ও কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ হারুনুর রশিদ বলেন, এতবড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একা হাতে চালিয়ে যাচ্ছেন সুপার। কারো কথা শুনছেন না, কারো মতামত গ্রহণ করছেন না। মাদ্রাসার সম্পদ কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে—তা সাধারণ মানুষ জানে না। এটা খুবই দুঃখজনক।
সুপার মোঃ সাদিকুল ইসলাম এ বিষয়ে সরাসরি কোনো অনিয়মের কথা স্বীকার না করে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যেই চলছে। সব কিছুই নিয়ম অনুযায়ী করা হচ্ছে।
তবে মাদ্রাসার সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান দাবি করেন, “আম বাগান বিক্রির ব্যাপারে রেজুলেশনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে কোনো অনিয়ম হয়নি।
শিবগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মুসহাক আলী বলেন, “উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের মাধ্যমে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়রা এ ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।