অনলাইন ডেস্ক :
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। গণমাধ্যম গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা না গেলে গণতন্ত্রও টিকবে না। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে মিডিয়ার মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। সেজন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি। সে কারণেই শেখ হাসিনা জনরোষে পতিত হয়েছিলেন। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৫ উপলক্ষে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্যউপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন সম্পাদক পরিষদের সহসভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, সম্পাদক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ। উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। এবার সরকারে থাকি আর না থাকি, আমরা কখনই অন্যায়ভাবে অন্যের মত চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করব না। আমরা আরেকজনের মতের স্বাধীনতাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দেব। এটাই আমাদের চিন্তাভাবনা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য আমরা লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি নতুন নয়। আমরা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি, সেই ষাটের দশক থেকে, তখন থেকে এ বিষয়টি সবচেয়ে সামনে এসেছে। পাকিস্তান শাসকদের বিরুদ্ধে সে সময়েও আমরা কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি, কাজ করেছি। তখন একটি সুবিধা ছিল, সংবাদমাধ্যমের একটি নিজস্ব স্বকীয়তা ছিল। যেখানে তাদের কোনো গোষ্ঠীভুক্ত করা অতটা সহজ হতো না। তাদের দেশপ্রেম, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ অনেক উঁচু ছিল।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমে বিভিন্ন মিস ইনফরমেশন প্রকাশিত হতে দেখেছি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমগুলোর আরও পেশাদারিত্ব দেখানো প্রয়োজন। কারণ দল বা রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে এর ভিকটিম আমরা হয়েছি। আমাদের কথা নানা সময়ে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা আশা করব, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গণমাধ্যমের যে সম্পর্ক রয়েছে, তা আরও ইতিবাচক হবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন অনাকাক্সিক্ষতভাবেই দেরি হচ্ছে। এ সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত। তাহলেই আমরা বলতে পারব জুলাই-পরবর্তী যে গণমাধ্যম আমরা চেয়েছিলাম, তা দৃশ্যমান হচ্ছে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ওপার থেকে শেখ হাসিনা প্রতিদিন বিবৃতি দেন। আবার আজকাল গ্রুপ বৈঠক করেন। মানে অনলাইনে গ্রুপে গ্রুপে ডাকেন এবং তাদের নির্দেশনা দেন। এরকম চলতে দেওয়া কি ভালো হচ্ছে? আমার কাছে মনে হয় না। আবার এরকম মুক্ত, অবাধ তথ্যের চর্চা বন্ধ করবেন সেটাও কি নীতির মধ্যে পড়ে?
তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে বিগত সরকারের সময় যেসব সাংবাদিকের নামে মামলা করা হয়েছিল, সে মামলাগুলো এখন পর্যন্ত আছে। ড. ইউনূসের মতো মানুষ এ মামলাগুলো তুলছেন না কেন?