স্টাফ রিপোর্টার: মোঃ মাহমুদুল হাসান
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের বড় মরাপাগলা গ্রামে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে ২৪ ঘণ্টা ধরে বাবার লাশ ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে আটকে রাখা হয়। অবশেষে গ্রাম্য সালিশে সম্পত্তি ভাগাভাগির সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মাজেদ বিশ্বাস (৫০) নামের ওই ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হবিবুর রহমান জানান,বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। দুই ছেলে বাবার মৃত্যুর পর লাশ দাফন করতে এলে স্ত্রী ও মেয়েরা বাধা দেন। সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। আমরা সালিশে বসে সমঝোতা করিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করি।
জানা গেছে,মাজেদ বিশ্বাসের প্রথম স্ত্রীর ঘরে ১০টি সন্তান ছিল। এর মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন। জীবিত সাত সন্তানের মধ্যে চার মেয়ে এবং তিন ছেলে। প্রথম স্ত্রী মারা গেলে প্রায় ২০ বছর আগে মাজেদ হামফুল বেগম নামে এক নারীকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তান না থাকলেও তিনি প্রথম পক্ষের সন্তানদের স্নেহ-মমতায় বড় করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,মাজেদের দুই ছেলে লতিফুর রহমান ও আবদুল জাব্বার বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত। কয়েক মাস আগে পিতার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে তারা চিকিৎসার কথা বলে তাকে নিয়ে যান এবং পরে বাবার জমিজমা নিজেদের ও এক ভাতিজার নামে দলিলে লিখিয়ে নেন। এঘটনায় ক্ষুব্ধ হন দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম ও মেয়েরা। তারা অভিযোগ করেন,তাদের মতামত ও অধিকার উপেক্ষা করে সম্পত্তি ভাগ করে নেওয়া হয়েছে।
হামফুল বেগম বলেন,আমি ওদের ছোট ছোট বাচ্চা থাকতে লালনপালন করেছি। আমার স্বামী আমাকে না জানিয়েই সম্পত্তি দিয়ে দিয়েছেন। এমনকি মৃত্যুর আগেই তালাকনামা পাঠিয়েছেন। আমি সেটা স্বীকার করিনি। এখন তারা লাশ দাফন করতে চাইলে আমি বলেছি,প্রথমে সালিশে বসে বিচার করো,তারপর দাফন হবে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন বলেন,সোমবার সকাল ও বিকেলে দুই দফা সালিশ হয়। উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান,তিন ইউপি সদস্য এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। দীর্ঘ আলোচনার পর ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত সিদ্ধান্ত হয়,সবাই বৈধ অংশ পাবেন। এরপর দাফনে সম্মতি দেন হামফুল ও তার পক্ষের লোকজন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মতিউর রহমান জানান,লাশ দাফনে বিরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। পরে সালিশে সমাধান হওয়ায় দাফন করা হয়।