আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের সেই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছামাদ খাঁন স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে নিয়োগের পাঁয়তারা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র ও অফিস আদেশ অমান্য করে রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজে কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছিল। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাশেম মাস্টার এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছামাদ খাঁন যোগসাজশ করে গোপনে নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
কলেজে পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও কম্পিউটার বিষয়ে চারজন ল্যাব সহকারী নিয়োগ দিতে পরীক্ষা গ্রহণের আয়োজন চলছিল। এতে আবেদন করেছিলেন ৫৭ জন। গত ১৩-১৪ অক্টোবর তাদের মধ্যে ইন্টারভিউ কার্ড বিতরণ করা হয়। পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা ছিল আজ শনিবার (১৮ অক্টোবর)। অথচ এই নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর পরিপত্র জারি এবং ৫ অক্টোবর অফিস আদেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোমদেল হোসেন অবসরে গেলে সহকারী অধ্যাপক (বাংলা) সিরাজুল ইসলামকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন গভর্নিং বডির সভাপতি আবুল হাশেম মাস্টার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার পরও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি নিয়োগের বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। নীতিমালা বহির্ভূত কাজে অপারগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় ওই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। এরই ধারাবাহিকতায় দুর্গাপূজার ছুটির সময়ে শিক্ষা নীতিমালা ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজি) ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছামাদ খাঁনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ইসলামের ইতিহাস) আব্দুল কাদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছামাদ খাঁনের সিনিয়র। তা সত্ত্বেও নীতিমালা লঙ্ঘন করে দায়িত্ব দেওয়া হয় আব্দুস ছামাদ খাঁনকে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়।
নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে শনিবার সকালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছামাদ খাঁন বলেন, ‘আমাদের কলেজে অধ্যক্ষ নেই। অধ্যক্ষ এবং চারজন ল্যাব সহকারী নিয়োগ জন্য নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়। গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতে ফোন কলের মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ডের একজনের অসুস্থতার খবর পাই। অপূর্ণাঙ্গ বোর্ড দিয়ে নিয়োগ হবে না, তাই আমরা এই পরীক্ষা স্থগিত করেছি। পরবর্তীতে পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।’