মোঃ নুর আলম দিনাজপুর প্রতিনিধি:
ঈদুল আজহার আনন্দ শেষে প্রিয়জনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কর্মস্থলের পথে ফিরছেন হাজারো মানুষ। আর এই ফেরার পথ যেন হয় নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল—সেই লক্ষ্যেই দিনাজপুরের বীরগঞ্জে নিরাপত্তা জোরদারে চেকপোস্ট বসিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
ঈদের পরে শনিবার (১৪ জুন) সকাল থেকে দিনাজপুর সেনাক্যাম্পের আওতাধীন ২৮ বীর ব্যাটালিয়নের সদস্যরা বীরগঞ্জ পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট— বাসস্ট্যান্ড, বিজয় চত্বর, থানা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি ও নিরাপত্তা কার্যক্রম চলমান রাখেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত চেকপোস্ট কমান্ডারদের নেতৃত্বে যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই করা সহ করা হয় কঠোর তল্লাশি।
সেই সাথে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, যাত্রীবাহী বাস, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানসহ সব ধরনের যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, ইনস্যুরেন্স, ট্যাক্স টোকেন এবং চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স যাচাই করেন সেনাসদস্যরা। অনিয়ম ধরা পড়লেই গ্রহন করা হচ্ছে আইনানুগ ব্যবস্থা।
তবে এই তল্লাশি অভিযান শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়াস নয়, বরং এক মানবিক উদ্যোগ— যা মানুষের ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে।
চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ওবায়দুল হক বলেন, “আমরা চাই, ঈদের পর সবাই যেন নিরাপদে তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারে। এটি শুধু দায়িত্ব নয়, আমাদের মানবিক দায়বদ্ধতা। ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং সন্দেহজনক যেকোনো কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ, তথ্য সহায়তা ও দ্রুত দিকনির্দেশনার কারণে মানুষের মাঝে তৈরি হয়েছে আস্থা। যেকোনো অভিযোগ, তথ্য কিংবা জরুরি প্রয়োজনে সেনাবাহিনী চালু করেছে হটলাইন— ০১৭৬৯৬৮৬৮৫৬।
এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। বীরগঞ্জ পৌর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী বলেন,“চেকপোস্টের কারণে যেমন অপরাধ কমেছে, তাই আগের চেয়ে মানুষ এখন অনেক বেশি নিরাপদ বোধও করছে।”
পথচারী সাদেকুল ইসলাম বলেন, “সেনাবাহিনীর কারণে শহরে শৃঙ্খলা ফিরেছে। নেই যানজট, নেই বিশৃঙ্খলা, মানুষ স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারছে।”
ঈদের পর ঘরমুখো মানুষের ঢল যেমন থাকে, তেমনি থাকে কর্মস্থলে ফেরার চাপও। এই সময়ে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বীরগঞ্জে তৈরি হয়েছে এক নির্ভরযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ—যেখানে মানুষ নিশ্চিন্তে ফিরছেন জীবিকার টানে, পেছনে রেখে ঈদের সোনালি স্মৃতি।