বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ৪ নং পাল্টাপুর ইউনিয়নের জনতিয়া ঘাট সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো ধরনের সরকারি অনুমোদন বা পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই দিনের পর দিন এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ ও জনজীবন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এই অবৈধ বালু উত্তোলনের কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় এক কীটনাশক ব্যবসায়ী হামিদুল। তার তত্ত্বাবধানে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে নদী থেকে বালু তুলে তা বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে অভিযুক্ত হামিদুলের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ড্রেজার মেশিন বসানোর পর থেকেই নদীর পাড় দুর্বল হয়ে পড়ছে। বর্ষা মৌসুমে তীরভাঙন দেখা দিলে আশপাশের ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
একজন স্থানীয় কৃষক বলেন, “প্রতিদিন আমাদের চোখের সামনে নদী কেটে বালু নেওয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ, কিন্তু সাড়া নেই। অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)/ইওএল অফিসারের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হয়। তবে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার কাছ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের মতে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এ নীরবতা অবৈধ কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে।
আইনি দিক বলছে, পরিবেশ ও বালুমহাল ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী—
পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করা সম্পূর্ণ অবৈধ। নদী বা জলাশয় থেকে বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে সরকারি ইজারা ও পরিবেশগত ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ মিললে ড্রেজার জব্দসহ জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী অবিলম্বে অবৈধ ড্রেজার মেশিন অপসারণ, বালু উত্তোলনের বৈধতা যাচাই এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

