ইমন সরকার, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ নগরের চরপাড়া এলাকায় হেলথ কেয়ার ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে লিফট বন্ধ করে দেওয়ায়, সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে এক প্রসূতি স্ত্রী সিঁড়িতে পড়ে যায়। এতে গর্ভেই তার সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনার অভিযোগে ওই ক্লিনিকের মালিক রঞ্জয় নন্দীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।
ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিস ওই ক্লিনিককে সাময়িক বন্ধ করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্লিনিক মালিকের শাস্তি দাবি করে বৃহস্পতিবার বিকেলে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে সাইবার কমিউনিটি নামে একটি সামাজিক সংগঠন।
ভূক্তভোগি নারীর পরিবার সূত্রে জানা যায়,ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনে কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক লুৎফর রহমান ৩ আগস্ট তার প্রসূতি স্ত্রীকে নিয়ে ময়মনসিংহ নগরীর ব্রাক্ষপল্লী এলাকার হেলথ কেয়ার ডায়াগনোস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে উঠার সময় তাদেরকে লিফটে তিন তলায় উঠানো হয়। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও সিজার অপারেশন করার মত পরিবেশ না থাকায় পুলিশ কর্মকর্তা তার স্ত্রীকে নিয়ে নিচে নেমে যেতে চান। সিজার করতে রাজি না হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিফট বন্ধ করে দেন। এ সময় সিঁড়িতে পড়ে যান প্রসূতি মা। এতে গর্ভেই তার সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কৌশল করেন।
বিষয়টি সাইবার কমিউনিটি নামে একটি সামাজিক সংগঠন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন । এর পরেই টনক নড়ে স্থানীয় আইন শৃংখলা বাহিনীর। বৃহস্পতিবার সকালে ওই হাসপাতালের মালিক রঞ্জয় নন্দীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
ভুক্তভোগি নারীর স্বামী লুৎফর রহমান বলেন, সন্তান প্রসব করানোর জন্য প্রথমে জামালপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তার স্ত্রীকে। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। প্রসূুিতকে নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মোড়ে এলে হেলথ কেয়ার হাসপাতালের সাবেক ম্যানেজার হান্নান তাদেরকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে ওই ক্লিনিকে নেওয়া যায়। হাসপাতালের পরিবেশ দেখে সেখানে সিজার করতে না চাইলে, তাদেরকে হাসপাতাল থেকে বের হতে বাঁধা দেওয়া হয় এমনকি লিফট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে তার স্ত্রী পড়ে যান। এতে গর্ভেই তাদেও সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।
সাইবার কমিউনিটি নামে একটি সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাকিব আহমেদ তুহিন বলেন, বিষয়টি জেনে তারা তৎপর হন। বিষয়টি স্থানীয় সিভিল সার্জন অফিসকে অবহিত করা হয়। এর পরই ওই হাসপাতালের মালিককে গ্রেপ্তারসহ ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা এ সব অবৈধ ক্লিনিক বন্ধসহ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করি। সেখান থেকে প্রশাসনকে অবৈধ ক্লিনিক বন্ধের ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. ছাইফুল ইসলাম বলেন, প্রসূতি মায়ের শিশু সন্তান নষ্ট হওয়ার অভিযোগে প্রাথমিক তদন্ত করে দেখে গেছে ওই হাসপতালের লাইসেন্স নবায়ন নেই। এই কারনে সাময়িক হাসপাতালটি বন্ধ কওে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।