আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলা সদরের পাটেশ্বরী বাজারে মাদক না পেয়ে মোটরসাইকেল আরোহীর টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জনতার হাতে আটক হন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের হস্তক্ষেপে তারা মুক্তি পান এবং উপস্থিত জনতার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে এলাকা ত্যাগ করেন।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের পাটেশ্বরী বাজারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের একটি পিকআপ ভ্যান দিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী আনিছুর রহমানকে ধাক্কা দিয়ে থামানো হয়। তিনি মাটিতে পড়ে গেলে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। এসময় অধিদপ্তরের সিপাহী সোহেল জনসম্মুখে তল্লাশি চালান। মাদকজাতীয় কিছু না পেয়ে আনিছুর রহমানের পকেটে থাকা প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং জোরপূর্বক তাঁকে গাড়িতে তুলতে চান। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘিরে ফেলে এবং গাড়িসহ আটক করে।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল বলেন, “আনিছুর রহমান চিকিৎসার টাকা ও প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা সঙ্গে রেখেছিলেন। সেটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।” বাজারের ব্যবসায়ী জাহিদুল বলেন, “মাদক না পেয়েও তাকে জোর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করা হয়, এটি প্রশাসনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা।”
খবর পেয়ে সাব-ইন্সপেক্টর আজহারুল ইসলাম, জান্নাতুল ফেরদৌস, সিপাহী ইমরান ও জয় ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এসময় তারা উত্তেজিত জনতার সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ান এবং ভিডিও ধারণকারী এক ব্যক্তির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং আটক কর্মকর্তাদের উদ্ধার করেন। এসময় কর্মকর্তারা স্থানীয় জনতার কাছে ক্ষমা চেয়ে সরে যান।
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান বলেন, “কর্মকর্তাদের আটক রাখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাদের উদ্ধার করেছি।”
এ বিষয়ে সাব-ইন্সপেক্টর আজহারুল ইসলাম দাবি করেন, “নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে মাদক থাকার সন্দেহে যুবকটিকে আটক করা হয়েছিল। তবে তাঁর কাছে কিছু না থাকায় ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।”
এদিকে কুড়িগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাব-ইন্সপেক্টর জান্নাতুল ফেরদৌস সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। আর ইন্সপেক্টর আবু সাইদ মোঃ নুরুন্নবী বলেন, “ঘটনার দিনে আমি কুড়িগ্রামের বাইরে অফিসিয়াল কাজে ছিলাম, এ বিষয়ে আমি অবগত নই।”