অনলাইন ডেস্ক :
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় একদিনেই আরও অন্তত ৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক। এতে করে ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া সামরিক অভিযানের পর থেকে গাজায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ২৪৯ জনে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত ৬৭ জনের মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে আনা হয়েছে। একই সময় আহত হয়েছেন আরও ১৮৪ জন। সব মিলিয়ে এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৯২ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নিহতদের মধ্যে ৯৮ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের নাম মৃতের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে ও খোলা রাস্তায় এখনো বহু মানুষ আটকে আছেন, যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানানো হয় মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৮৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১১ হাজার ৪৫১ জন। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। ওই যুদ্ধবিরতির পর প্রায় দুই মাস গাজায় তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ সময় পার হলেও মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের আকাশপথে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যকেই তারা নতুন আগ্রাসনের কারণ হিসেবে দেখায়।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই দফায় হামলায় গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার বেশিরভাগ অবকাঠামো সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে, গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলছে।
গাজার ওপর চলমান এই হামলা ইসরায়েল ঘোষিত যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।