নওগাঁ প্রতিনিধি-মো:রুহুল আমিন শেখ :
অসহায় আমি অসহায়, খোদা তোমারি দুনিয়ায় ৷ তুমি আমায় সৃষ্টি করিয়া,
কেন পাঠাইলা নিষ্ঠুর এই দুনিয়ায় ? অসহায় আমি অসহায়, খোদা তোমারি দুনিয়ায় ৷
কবিতার এই চরণ গুলোর মতোই ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মিশিরন এর আর্তনাদ সৃষ্টিকর্তার প্রতি। যে বয়সে স্বামী, সন্তান, নাতিপুতির সঙ্গে আনন্দঘন সময় পার করার কথা, যে বয়স পরিপূর্ণ হলে দুনিয়ার সকল স্বাদ বিসর্জন দিয়ে সৃষ্টিকর্তার নিকট এবাদতে মগ্ন থাকার কথা, যে বয়সে শরীরের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত পরিচর্যা, ঠিক সেই বয়সেই এখনো নিজের সম্বল নিজেই। বলছি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বৃদ্ধা মিশিরনের গল্প ।
চিরদিনের মত হারিয়েছেন স্বামী সন্তান, বর্তমানে আপন বলতে কেউই নেই বৃদ্ধার। মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন প্রায় ৯০ বছর বয়সের বৃদ্ধা মহিলা মিশিরন। নেই থাকার কোন নিজস্ব বাড়ি। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহাপাড়া গ্রামে অন্যের জায়গায় কুঁড়েঘরে বসবাস করছেন বৃদ্ধা।
জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও জোটেনি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর। জানা যায় যে, গত কয়েক বছর আগে এক গৃহস্ত বাড়িতে কাজ করার সময় গাভীর পায়ের নিচে চাপা পড়ে বৃদ্ধার বাম পা ভেঙে যায়। পা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে এখন আর তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করতে পারেন না।
দু’মুঠো ভাতের আশায় ভাঙা পা নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্য প্রার্থনা করে বর্তমানে চলছে বৃদ্ধার জীবিকা। স্বামী সন্তান ও আপনজন কেউ না থাকায় এ বয়সেও নিজেই রান্না করে খান মিশিরন। এক বেলা রান্না না হলে অনাহারে দিন পার করতে হয় তাকে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বিষয়টা শুনে আফসোস করে বলেন, বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখের।এ ঘটনা আমার জানা ছিল না। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমি সেই বৃদ্ধা মাকে যথাযথ সাহায্য সহযোগিতা করবো।