অনলাইন ডেস্ক :
আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। গত জুলাই মাসে এই হার ছিলো ৮ দশমিক ৫৫। গত আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি যা হয়েছে, তা গত ৩ বছরে মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২২ সালের জুলাই মাসে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিলো। এরপর আর কখনো ৮ শতাংশের নিচে মূল্যস্ফীতি নামেনি।
আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতি চিত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত আগস্ট ২০২৫ মাসের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সারা দেশে সার্বিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮.২৯ শতাংশে।
এর আগে জুলাই ২০২৫ মাসে এ হার ছিলো ৮.৫৬ শতাংশ। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি কমেছে ০.২৭ শতাংশ পয়েন্ট। বিবিএসের হিসাবে আগস্টে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭.৬০ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিলো ৭.৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি আগস্টে ৮.৯০ শতাংশ, জুলাইয়ে ছিলো ৯.৩৮ শতাংশ।
শহর ও গ্রামের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গ্রামে আগস্টে সাধারণ মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮.৩৯ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিলো ৮.৫৫ শতাংশ। অন্যদিকে শহরে আগস্টে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮.২৪ শতাংশ, জুলাইয়ে ছিলো ৮.৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ দুই ক্ষেত্রেই মূল্যস্ফীতি কমেছে, তবে গ্রামে দাম কিছুটা বেশি চাপে রয়েছে।
খাদ্যখাতের ভেতরে আলাদা করে দেখা যায়, গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আগস্টে ৭.৫০ শতাংশ এবং শহরে ৭.৮৭ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত খাতে গ্রামে আগস্টে হার ৯.২৮ শতাংশ আর শহরে ৮.৪৮ শতাংশ। এতে বোঝা যায়, শহরে খাদ্য বহির্ভূত খাতের ব্যয় তুলনামূলক বেশি হলেও গ্রামের মানুষ খাদ্যদ্রব্যের মূল্যচাপে বেশি কষ্ট পাচ্ছে।
এছাড়া বারো মাসের গড় হিসাব অনুযায়ী সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে আগস্ট ২০২৫ সময়ে সাধারণ মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.৫৮ শতাংশ। এর আগের বারো মাসে এ হার ছিলো ৯.৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি হিসাবে সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখাচ্ছে।
এদিকে বিবিএসের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে খাদ্যপণ্যের দামে স্বস্তি আসার মূল কারণ মৌসুমি সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা হ্রাস পাওয়া। তবে অখাদ্য খাত—বিশেষ করে ভাড়া, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচ—এখনও ঊর্ধ্বমুখী থাকায় সামগ্রিক চাপ পুরোপুরি কমেনি।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগস্টে মুদ্রাস্ফীতি ৮.২৯ শতাংশে নামা ইতিবাচক হলেও এটি এখনও সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রার খরচে চাপ অব্যাহত আছে। টেকসইভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমাতে হলে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা, পণ্য আমদানি ব্যয় কমানো এবং কারসাজি রোধে কঠোর তদারকি প্রয়োজন।