বিনোদন ডেস্ক :
বার্ধক্যজনিত রোগের সঙ্গে লড়াই করে চলে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিক। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আজ শনিবার দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে সকাল ১০.৩০টা নাগাদ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন অঞ্জনা। অনেক সময় বাড়িতেই তার চিকিৎসা হতো। তার দুই মেয়ে নীলাঞ্জনা এবং চন্দনা মায়ের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। স্বাভাবিকভাবে, খুব ভেঙে পড়েছেন যিশুর স্ত্রী।
অভিনেত্রীর জন্ম ১৯৪৪ সালে। কোচবিহারের মেয়ে, নাম ছিল আরতি ভৌমিক। ২০ বছর বয়সে বাংলা সিনেমায় অভিষেক হয় ‘অনুষ্টুপ চন্দ’ ছবির মাধ্যমে। তবে প্রথম ছবি মুক্তির আগেই তিনি নাম বদলে হন অঞ্জনা। উত্তম কুমারের সঙ্গে তার জুটি প্রশংসিত সর্বত্র। নিজের ক্যারিয়ারের অধিকাংশ ছবিই করেছেন মাহনায়কের সঙ্গে। বহু দর্শক বিশ্বাস করতেন, উত্তম কুমারের সঙ্গে তার যে জমাট রসায়ন, তা অন্য কোনও নায়কের সঙ্গে জুটি বাঁধলে সেভাবে পর্দায় ধরা দেয় না।
অবশ্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও ‘মহাশ্বেতা’ ছবিতে তার অভিনয় নজর কাড়ে দর্শক ও সমালোচকদের। তারপর নেভি অফিসার অনিল শর্মাকে বিয়ে করেছিলেন অঞ্জনা। বিয়ের পর থেকেই অভিনয় জগতের সঙ্গে বাড়তে থাকে দূরত্ব। তিনি বরাবরই বিশ্বাস করতেন, দর্শকদের অপেক্ষা করানোর মধ্যেই অভিনেতার সাফল্য। যদিও আশির দশকের পর সেভাবে আর কোনো দিনই পর্দায় দেখা যায়নি তাকে।
ষাট থেকে আশির দশকের বাংলা সিনেমায় ছিল তার উজ্জ্বল উপস্থিতি। এখনও বহু দর্শক মনে রেখেছেন তাকে। ‘চৌরঙ্গী’, ‘থানা থেকে আসছি’, ‘নায়িকা সংবাদ’র মতো ছবিতে তার অভিনয় এখনও মনে রেখেছেন দর্শক। তার এবং উত্তম কুমারের পর্দার রসায়ন দর্শকের ছিল খুব প্রিয়। অঞ্জনা বহু বছর ধরেই ছিলেন অন্তরালে। দুই মেয়ে নীলাঞ্জনা ও চন্দনা দুজনেই একসময় অভিনয় করতেন।
নীলাঞ্জনা এখন টেলিপাড়ার সফল প্রযোজক। তার স্বামী অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত চুটিয়ে অভিনয় করছেন। কয়েক বছর আগে ‘উমা’ সিনেমার মাধ্যমে টলিউডে অভিষেক হয় যিশু-নীলাঞ্জনার বড় মেয়ে অর্থাৎ অঞ্জনার নাতনি সারার।