স্পোর্টস ডেস্ক :
বাংলাদেশকে ডিএলএস পদ্ধতিতে ৮ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে আফগানিস্তান। যদিও ইনিংসের মাঝ পথেই বাংলাদেশের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। টাইগারদের হারে অস্ট্রেলিয়াও সেমিফাইনালের আগেই ছিটকে গেল।
তবে শেষ চারে যাওয়ার দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের। ১১৫ রান তাড়া করতে হতো ১২.১ ওভারে। লিটন দাসের ইতিবাচক ব্যাটিং সেটি একেবারে নাগালের বাইরে যেতে দেয়নি। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসানের পর মাহমুদউল্লাহর বাজে ব্যাটিং বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সেন্ট ভিনসেন্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৬টায় ম্যাচটি শুরু হয়। যেখানে প্রথমে ব্যাট করা আফগানরা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করেছে। তবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশকে ১২.১ ওভারে ১১৬ করতে হতো। কিন্তু সেই লক্ষ্য তো ছুতে পারেনি, বরং বৃষ্টির কারণে ১৯ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ১১৪ রান টার্গেট থাকলেও ১৭.৫ ওভারে ১০৫ রানে গুটিয়ে যায়।
১১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ১৩ রান তুললেও দ্বিতীয় ওভারে ফজল হক ফারুকির বলে শূন্য রালে আউট হন তানজিদ হাসান তামিম। পরের ওভারে নাভিন উল হককে জোড়া উইকেট উপহার দেয় বাংলাদেশ। এবার নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান উইকেট বিলিয়ে দেন। এরপর বৃষ্টি শুরু হয়।
বৃষ্টি থামার পর ফের খেলা শুরু হলে সৌম্য সরকার রশিদ খানের বলে বোল্ড হন ১০ রানে। এরপর তাওহিদ হৃদয় ৯ বলে দ্রুত ১৪ রান করলেও রশিদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন।
রশিদ খানের ওভারেও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা খেলেছেন রয়েসয়ে। ইনিংসে তার করা ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহ আউট হন ৯ বলে ৬ রান করে। মাহমুদউল্লাহর এমন ইনিংসেই মূলত শেষ হয়ে যায় সেমিফাইনালের স্বপ্ন। সেই ওভারের শেষ বলে আউট হন রিশাদ হোসনেও।
লিটন দাস হাফসেঞ্চুরি করে শেষ অবধি অপরাজিত থাকলেও রশিদ খান ও নাভিন উল হকের ভয়ংকর বোলিংয়ে অলআউট হয় বাংলাদেশ। লিটন ৪৯ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৪ করেন। আফগান বোলারদের মধ্যে রশিদ ও নাভিন ৪টি করে উইকেট ভাগ করে নেন।
টস হেরে এর আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে বাংলাদেশ দারুণ বোলিংয়ে আফগানদের শুরু থেকেই চাপে রাখে। যদিও ১০ ওভার পর্যন্ত কোনো উইকেটের দেখা পায়নি টাইগাররা। অবশেষে ১১তম ওভারে ব্রেকথ্রু এনে দেন রিশাদ হোসেন। এই লেগস্পিনারের বলে তুলে মারতে গিয়ে তানজিম হাসানকে ক্যাচ দেন ইব্রাহিম জাদরান। জাদরান ২৯ বলে এক চারে ১৮ রান করেন।
এরপর ১৬তম ওভারে নতুন ব্যাটার আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে ১০ রানে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। পরের ওভারেই জোড়া উইকেট নেন রিশাদ। প্রথম বলে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে সৌম্য সরকারের ক্যাচে বিদায় করেন এই স্পিনার। গুরবাজ ৫৫ বলে ৪৩ রান করেন। আর চতুর্থ বলে ফেরান গুলবাদিন নাইবকে। এবারও ক্যাচ নেন সৌম্য।
অসাধারণ বল করা তাসকিন নিজের শেষ ওভারে উইকেটের দেখা পান। মোহাম্মদ নবীকে শান্তর ক্যাচে আউট করেন। ৪ ওভারে তাসকিন দেন মাত্র ১২ রান।
আফগানদের হয়ে শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে রশিদ খান ১০ বলে ৩ ছক্কায় ১৯ রানের অপরাজিত ক্যামিও ইনিংস খেলেন। এই রান না করলে হয়তো ১০০ রানও হতো না আফগানদের।
বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে রিশাদ ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেটের দেখা পান তাসকিন ও মোস্তাফিজ।
আগামী ২৭ তারিখ ভোরে প্রথম সেমিফাইনালে ত্রিনিদাদে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান।