মোঃ মাহাবুল ইসলাম মুন্না রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ১৫ টাকা কেজি দরে কার্ডধারীদের মধ্যে বিতরণের জন্য যে সিদ্ধ চাল সরবরাহ করা হচ্ছে, তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। খুদমিশ্রিত, বড় ও ছোট ভাঙা দানা, মরা দানা, অর্ধসিদ্ধ চাল, বিবর্ণ দানা ও বিজাতীয় পদার্থে ভরপুর চাল বিতরণ হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিন চিত্র তথ্যের ভিত্তিতে গোদাগাড়ী এলএসডি রেলবাজার খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায়, চালের সঙ্গে রয়েছে চালের গুড়া, ভিন্ন জাতের মিশ্রণ এবং বিকট গন্ধ। নির্দেশনামতে যে পরিমাণ মিশ্রণ থাকার কথা, বাস্তবে তার অর্ধেকেরও বেশি পাওয়া গেছে।
চুক্তিভুক্ত রাইস মিল—কামাল অটো রাইস মিল, হাসেম অটো রাইস মিল ও আজিজ অটো রাইস মিল—এর সরবরাহকৃত চালের মান নির্দেশনার তুলনায় ন্যূনতম মানেও পৌঁছেনি।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দেখা যাবে না! চাল দেখতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া চাল দেখা যাবে না। তবে একজন সাংবাদিক যেতে পারবেন, তাও আবার মোবাইল ছাড়া এবং কোনো ভিডিও ধারণ করা যাবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ জানান, “আমরা ইতিমধ্যে গুদাম ইন্সপেকশন করেছি এবং ভাল চাল পেয়েছি। সেই অনুযায়ী রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে। তবে আপনারা চাইলে আবেদন করলে দেখার ব্যবস্থা করা হবে।”
বিতরণের সময় অনিয়ম ঘটনার দিন খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ডিলার সাইফুল ইসলামের কাছে ৫০৯ বস্তায় ১৫ হাজার ২৭০ কেজি চাল হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ট্রলি, ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে অন্যত্র চাল সরিয়ে নেওয়ার ঘটনাও দেখা গেছে।
গোদাগাড়ী উপজেলায় ২৫ জন ডিলারের মাধ্যমে এসব চাল বিতরণ হচ্ছে। শুধু খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী নয়, টিআর, টিসিবি, ভিজিবি, ভিজিএফ ও ভিজিডি প্রকল্পেও একই নিম্নমানের চালের বিস্তার রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরীক্ষায় আর্দ্রতা সঠিক, অন্য মান প্রশ্নবিদ্ধ নমুনা হিসেবে আনা চাল ইউএনওর উপস্থিতিতে পরীক্ষা করা হলে ১৩.৮% আর্দ্রতা পাওয়া যায়। তবে চালের ভাঙা দানা, অর্ধসিদ্ধ, খুদিময় ও মরা দানাসহ অন্যান্য মান নিয়ে সন্তোষজনক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
কর্মকর্তাদের অবস্থান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোদাগাড়ী এলএসডি নাজমুল আলম বলেন, “উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া চাল দেখানো যাবে না।”
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী জানান, বর্তমানে মজুত রয়েছে ১১ টন গম ও ৫ হাজার টন চাল। তবে গুদামের চাল দেখতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি লাগবে।