স্টাফ রিপোর্টার:
নাটোরের লালপুরে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে সুমন আলী নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও রফিকুল ইসলাম নামে একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানার অর্থ ভিকটিম প্রাপ্ত হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
আজ (১৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহীম এই আদেশ দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান জানান, স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বিভিন্নভাবে প্রেম নিবেদন, কু-প্রস্তাবসহ উত্যক্ত করত স্থানীয় এক বখাটে যুবক সুমন আলী। স্কুলছাত্রী বিষয়টি বাড়িতে জানানোর সে ক্ষিপ্ত হয়ে তার সহযোগীদের নিয়ে ২০১৬ সালের ১৩ ফেব্রয়ারি ওই স্কুলছাত্রীর বাড়িতে হামলা করে তার মাকে একটি ঘরে আটকে রেখে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে চলে যায়। এ সময় তার বাড়ির টিনের বাক্স ভেঙে নগদ ৮০ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণের গহনা লুট করেও নিয়ে যায় তারা।
পরে স্কুলছাত্রীর মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে ঘরের দরজা খুলে দেয় এবং স্কুলছাত্রীর বাবাকে সংবাদ দেয়। পরে স্কুল ছাত্রীর বাবা ও স্থানীয়রা অভিযুক্ত সুমনের বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে ফেরত চাইলে তারা বিভিন্ন টালবাহনা করে। এরপর ১৭ ফেব্রয়ারি মেয়েকে ফেরতসহ টাকা ও গহনা ফেরত দেবে বলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়। কিন্তু ১৭ তারিখে মেয়েকে না দিয়ে উল্টো তাদের তাড়িয়ে দেয় সুমনের পরিবারের সদস্যরা। পরে এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে সুমন আলীর নামসহ ৬ জনের নামে ও অজ্ঞাত আরো ৩ জনকে অভিযুক্ত করে লালপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার ও সুমনকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশ তদন্ত করে সুমন আলী ও রফিকুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ সাড়ে ৬ বছর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রমাণ শেষে আদালতের বিচারক এই রায় প্রদান করেন।