অনলাইন ডেস্ক:
রাজাকার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ রাজধানী থেকে পিরোজপুরে নেয়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এবং শাহবাগ মোড়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ।
সাঈদীর ছেলেসহ জামায়াত-শিবিরের পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় সরকারি কাজে বাধা, মারধর, গাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় সাঈদীর ছোট ছেলে মাসুদ সাঈদী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামিক ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি সফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং ঢাকা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাইফুল ইসলামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা সাঈদী গত সোমবার রাতে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মৃত্যুর খবরে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বিএসএমএমইউ ও শাহবাগে জড়ো হয়। মরদেহ হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে পরে তারা তাণ্ডব চালায়। সাঈদীকে যুদ্ধাপরাধী বলায় কয়েকজন সাংবাদিককের ওপর হামলা করে তারা। পুলিশের ওপর চড়াও হয় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার ফারুক আহমেদ বলেন, ‘যখন মরদেহ গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়, তখন হাজার হাজার জামায়াত-শিবির লাশবাহী গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। তারা কোনো মতে এই মরদেহ পিরোজপুরে নিয়ে যেতে দেবে না। এসময় লাশবাহী গাড়ির সঙ্গে থাকা পুলিশ অফিসার ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে জামায়াত-শিবির। সঙ্গে তারা গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে।’
‘দেইল্লা রাজাকার’ হিসেবে একাত্তরে পরিচিত সাঈদী পরে ধর্মীয় বক্তা হিসেবে খ্যাতি পান। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জামায়াতের মনোনয়নে পিরোজপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মত অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের তখনকার নায়েবে আমির সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। পরে ২০১৪ সালে সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় আপিল বিভাগ।
সাঈদীর মৃত্যুর পর মঙ্গলবার তার গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় জামায়াতের নেতাকর্মীরা।