আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেন থেকে নিরাপদে শস্য রপ্তানির জন্য করা চুক্তি থেকে সরে এসেছে রাশিয়া। আর এতে গত কয়েকদিনে শস্যের দাম বেড়েছে যার কারণে বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে ক্ষুধার্ত থাকতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস এমন সতর্ক বার্তা দেন। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
শর্ত ও দাবি-দাওয়া মেনে না নেওয়ায় গত সোমবার কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি থেকে সরে যায় রাশিয়া। দেশটির দাবি, পশ্চিমারা এখনো মস্কোর সঙ্গে প্রতারণা করছে। বিশ্ববাজারে রাশিয়ার কৃষিপণ্য পৌঁছানোর পথে তারা বাধা সৃষ্টি করছে। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়েছেন, তাদের দাবি মেনে নিলে এবং সেগুলো কার্যকর করলেই তারা শস্যচুক্তিতে ফিরে আসবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে চলতি সপ্তাহে গমের দাম ৬ শতাংশ বেড়েছে, যা ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি। এ পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক প্রধান বলেন, দাম বাড়ায় কিছু মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে। অনেকেই হয়তো না খেয়ে মারা যাবেন। উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিবারগুলো দাম বাড়ার প্রভাব সবচেয়ে বাজেভাবে অনুভব করবে।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। এ পরিস্থিতি নিরসনে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শস্যচুক্তি হয়। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার এ চুক্তিটি রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিল তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণেই চুক্তিটি হয়েছিল। তবে পশ্চিমারা রাশিয়ার কয়েকটি দাবি মেনে না নেওয়ায় এটি ভেস্তে গেছে।
আর এরমধ্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান রাশিয়ার দাবি-দাওয়া গুলো মেনে নিয়ে পশ্চিমাদের পুনরায় কৃষ্ণ সাগর চুক্তিতে ফেরার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ বলছে, কৃষ্ণ সাগর চুক্তি বিশ্বব্যাপী ২৩ শতাংশের বেশি খাদ্যের দাম কমিয়ে দরিদ্র দেশগুলোর উপকৃত করেছিল। এছাড়া জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিও (ডব্লিউএফপি) ইউক্রেন থেকে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন শস্য সংগ্রহ করেছে। এসব খাদ্যশস্য আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়া ও ইয়েমেনে সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম প্রধান শস্য ও তেলবীজ উৎপাদনকারী দেশ ইউক্রেন। বিশ্বে প্রতিবছর যত গম উৎপাদন হয় তার প্রায় ১০ শতাংশই উৎপাদন করে ইউক্রেন। আর ভুট্টা উৎপাদন করে ১৫ শতাশ।