রাজনৈতিক ডেস্ক:
দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আজ বুধবার ঢাকায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে। শর্ত সাপেক্ষ দুই দলকেই সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নয়াপল্টনে আগে থেকে ঘোষিত সমাবেশ করবে বিএনপি। আর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
তবে বিএনপির সমাবেশ থেকে ‘অরাজকতা’র হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিএমপি কমিশনার ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে বলেন, ‘আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে অজারকতা হতে পারে। এটা যাতে না হয় এজন্য দলটিকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে, তারা যাতে সতর্কতার সাথে শান্তিপূর্নভাবে সমাবেশ শেষ করে।’
এরআগে, বুধবার রাজধানীতে সভা করতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে অনুমোদন দেয় ডিএমপি। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাটি বলছে, সমাবেশে দুই দলকে ব্যানারের আড়ালে লাঠি-রড বহন না করা এবং রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য না দেওয়াসহ ২৩টি শর্ত দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির সমাবেশ
একদফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে আজ সমাবেশ করবে বিএনপি। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে এ সমাবেশ। এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। বিএনপি সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো আলাদা মঞ্চ থেকে একই ঘোষণা দেবে বলেও জানা গেছে।
সমাবেশে মাইক ব্যবহারও সার্বিক নিরাপত্তা চেয়ে শনিবার বিএনপির দপ্তর থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন নেতারা। পুলিশ কমিশনার তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে, এটাই আমাদের একদফা। তত্ত্বাবধায়ক বলুন বা অন্তবর্তীকালীন বলুন বা যে নামেই তাকে ডাকুন না কেন, সে সরকার আসতে হবে। এবং ওই সরকারই আমাদের আগামী নির্বাচন পরিচালনা করবে। এটাই আমাদের একদফা দাবি।’
দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এই আন্দোলনের ফল পেতে চাই আমরা এখন। দেশের এই মুক্তি সংগ্রামে জয়ী হওয়ার জন্য যে একটা কল দিতে হয় সেটা আমরা ১২ তারিখ দেবো। এরপর আমরা প্রত্যাশা করবো জাতি, বাংলাদেশের মানুষ, মুক্তিকামী মানুষ এই আন্দোলনে যোগ দেবে।’
আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আজ শান্তি সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২৩ শর্তে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই অনুমতি দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগ থেকে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এই শান্তি সমাবেশের আয়োজন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ‘একটা পলাতক দণ্ডিত আসামীর হুকুমে সরকারের পতন হবে, একদফা আন্দোলন বাস্তবায়ন হবে, এটি ভাববার কোনো কারণই নেই। যারা এগুলো ভাবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘একদফা আন্দোলনকে তীব্র কোনো আন্দোলন বা নির্বাচনে বাঁধা হিসেবে আমরা দেখছি না। তারা যেনতেন ভাবেই ক্ষমতায় ফিরে আসতে চায়। এটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর সম্ভব না।’
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে বাঁধা এলে তা প্রতিহতের ঘোষণাও দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘একদফা আন্দোলনের নামে তারা কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করে কীনা তাহলে প্রতিহত করা হবে। তারা যদি আবারও আগুন সন্ত্রাস করে তাহলে প্রতিহত করা হবে। সে ধরনের পরিস্থিতি হলে কঠোর ভাবে মোকাবেলা করা হবে। কঠোরভাবে।’