অনলাইন ডেস্ক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো: জাহাঙ্গীর আলমের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করার পরে ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে জাহাঙ্গীরের ভাইয়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মোঃ আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট খারিজের এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এস এন গোস্বামী। রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো রাসেল চৌধুরী। এছাড়া শুনানিতে অধ্যাপক তাহেরের আইনজীবী কন্যা শেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সে মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২ জনকে খালাস দেন। পরবর্তীকালে হাইকোর্ট দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামি হলেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আর সাজা কমিয়ে হাইকোর্ট নাজমুল আলম ও আব্দুস সালামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। অন্যদিকে সাজা কমিয়ে দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে সব আপিলের শুনানি শেষে গত ৫ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যায় হাইকোর্টের দেয়া আগের রায়ই বহাল রাখেন। এই রায়ের ফলে ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের তৎকালীন সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড এবং নাজমুল আলম ও আব্দুস সালামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নাজমুল আলম বাদে অপর তিন দণ্ডিত আপিল বিভাগে (রিভিউ) আবেদন করলে গত ২ মার্চ সে রিভিউ খারিজ করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। পরবর্তীতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তা নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি।