অনলাইন ডেস্ক:
এখন থেকে আদালতে হাজির না হয়েও অডিও-ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেয়া যাবে। দেশের বাইরে অবস্থান, কারাগার, হাসপাতাল, ফরেনসিক ল্যাবরেটরিসহ অন্যান্য স্থান থেকে সংশ্লিষ্টরা মামলার কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন। এর ফলে মামলাজট, খরচ ও সময় কমবে মনে করছেন আইনবিশেষজ্ঞরা। তবে আসামির আত্মর্সমপণ, ইন্টারনেট সংযোগ এবং ডিভাইস নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন-২০২০ এর ৫ ধারার ক্ষমতাবলে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রোববার একটি ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ জারি করেছেন।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নিম্নআদালতের মামলার সাক্ষী, অভিযুক্ত ব্যক্তি, আইনজীবী, বিশেষজ্ঞ এবং মামলার সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অডিও-ভিজুয়ালের মাধ্যমে মামলায় উপস্থিতি, সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানিসহ সকল বিচারিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
এক্ষেত্রে দেশের বাইরে অবস্থান, কারাগার, হাসপাতাল, সেইফ হোম, প্রত্যয়িত প্রতিষ্ঠান, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, নিরাপত্তামূলক হেফাজত, সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস, ফরেনসিক ল্যাবরেটরি ছাড়াও অন্য যেকোনো স্থান থেকে আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নেয়া যাবে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মনোনীত কোনো ব্যক্তি সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বিদেশে বাংলাদেশি সংশ্লিষ্ট কনস্যুলেট/দূতাবাস/হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা সমন্বয়কারী হবেন। এমন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথমেই আদালতে আবেদন জানাতে হবে। আদালত অনুমতি দিলেই মামলা শুনানীর জন্য আসবে পক্ষরা।
অনলাইনে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার এসব নির্দেশনাকে স্বাগত জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, কেউ অসুস্থ হলে বা দেশের বাইরে অবস্থানের কারণে কোনো মামলা আর আটকে থাকবে না।
অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, “একজন ডাক্তার যিনি পোস্টমর্টেম করেছেন তিনি হয়তো স্টেশনে নেই, দূরবর্তী কোনো স্থানে আছেন। যার ফলে ওনাকে ছুটি নিতে, আসতে হয় তাতে অনেক সময় নষ্ট হয়। এই ক্ষেত্রে বিচার কাজ বিলম্বিত ও দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। সেটার জন্য এই আইনটা প্রয়োগ করা হয় তার জন্য মাননীয় প্রধান বিচার উদ্যোগটা নিয়েছেন। এটা অত্যন্ত ভালো একটা উদ্যোগ।”
আইনজীবীরা জানান, এতে করে বিচারপ্রার্থী জনগণ এবং আদালতের সময় ও খরচ দুটোই বাঁচবে।
তবে কোনো মামলার আসামীকে যদি আত্মসর্মপণ করতে বলা, সেক্ষেত্রে কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, তা নতুন নির্দেশনায় উল্লেখ নেই, বলছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা।
এছাড়া সব পক্ষের কাছে ইন্টারন্টে সেবা ও ডিভাইস না থাকলে সমস্যা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।