স্টাফ রিপোর্টার:
উজানের পাহাড়ি ঢলে টইটম্বুর সুনামগঞ্জের সব নদ-নদী। পানি ঢুকে পড়েছে ছোট বড় ৯৫টি হাওড়েও। আতঙ্কে নদীতীরের মানুষ। এ অবস্থা চললে নিম্নাঞ্চল বন্যার কবলে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পাহাড়ি ঢলে টইটুম্বর সুনামগঞ্জের সব নদ-নদী। হাওড়গুলোতে হু হু করে ঢুকছে পানি। প্রথমে হাওড়ে পানি আসায় আশীর্বাদ মনে করলেও এখন আতঙ্কে হাওড়বাসী। এ অবস্থা চললে সুনামগঞ্জ সদর, তাহেরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও দোয়ারাবাজারসহ ৬টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল শিগগিরই বন্যার কবলে পড়বে বলে শঙ্কা তাদের।
অলিরবাজার গ্রামের সিরাজ মিয়া বলেন, ‘নদীতে ঢলের পানি নেমেছে। শ্রমজীবী মানুষ খুব কষ্ট করছেন। টানা বৃষ্টিতে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।’
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের আলী রাজ বলেন, ‘বৃষ্টি, বজ্রপাত ও ঢলের পানি নিয়ে মানুষ অনেক বিপদে আছে। গেল ৭২ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে। তবে ১৬ জুন থেকে ১৭ জুন বৃষ্টিপাত কম হয়েছে।’
সুনামগঞ্জ শহরের বড়পাড়া এলাকার রিকশা চালক আওলাদ হোসেন জানান, বৃষ্টির জন্য রিকশা চালাতে কষ্ট হয়। মানুষ ঘর থেকে বেশি বের হয় না। গরিব মানুষ, তাই পেটের দায়ে রুটি রুজির ঘর থেকে বের হতে হয়।
ভ্যান চালক সবুজ মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টির জন্য তেমন ভাড়া হয়নি। সারা দিন বৃষ্টি পড়ে তাই ভ্যানগাড়ি কেউ নিতে চায় না।’
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মন্তুষ দাস বলেন, ‘দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের শক্তিয়ারখলা থেকে দূর্গাপুর ১০০ মিটার এলাকা পর্যন্ত মিছাখালী ড্যামের পানি হাওড়ে প্রবেশ করে। এটি একটি ডুবন্ত সড়ক। বর্ষা এলে ঢল নামে, ঢল নামা বন্ধ হয়ে গেলে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দিদারের আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানান, জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে সেভাবে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া আছে। বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে দেড় মাস হাওড়গুলোতে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ছিল না। পাহাড়ি ঢলে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়েছে। হাওড়ে বেড়েছে দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গত এক সপ্তাহে চেরাপুঞ্জিতে ৭২০ ও সুনামগঞ্জে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ইতোমধ্যে ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ৪ মিটার বেড়েছে।