স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের মানুষের গৌরব, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের বর্ষপূতি আজ। এক বছর আগে, এই দিনে বহু বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে প্রমত্তা পদ্মার বুকে যাত্রা শুরু করে পদ্মা সেতু। সেতুটি শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহার কংক্রিটের অবকাঠামো নয়, দেশের মানুষের গর্ব, সক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতীক।
পদ্মা সেতু চালুর পর সামগ্রিকভাবে প্রসার হচ্ছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের। দেশের দীর্ঘতম এ সেতু চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মানুষ উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠছে একের পর এক শিল্পকারখানা। সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থান, বিনিয়োগের জোয়ার, অর্থনৈতিক মুক্তির পথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল।
মাদারীপুর বিসিক সহকারী মহাব্যবস্থাপক পার্থ সারথি সরকার বলেছেন, সেতুকে কেন্দ্র করে এগোচ্ছে মাদারীপুর। এরই মধ্যে জেলার বিসিক এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে নতুন শিল্পকারখানা।
শরীয়তপুর ও ফরিদপুরের অর্থনীতিতেও এসেছে নতুন জোয়ার। রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় পোশাক কারখানা গড়ে উঠছে এ দুই জেলায়।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স সভাপতি কাজী আমিনুল হক জানিয়েছেন, তাল মিলিয়ে এগোচ্ছে খুলনা অঞ্চলও। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় কমে আসছে পণ্য পরিবহন খরচ, তাই নানামুখী শিল্পের বিকাশ ঘটছে সেখানে। পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে মোংলা বন্দর দিয়ে।
অর্থনীতিবিদ ফরাস উদ্দিনের পরামর্শ, এ সেতুর পুরো সুফল পেতে হলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে আরও উন্নত করতে হবে। পাশাপাশি দিতে হবে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ।
পদ্মা সেতুর কারণে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে গোপালগঞ্জ-নড়াইলেও। শিল্পকারখানা নির্মাণের জন্য এ দুই জেলায় জমি কিনেছেন অনেক উদ্যোক্তা। আগামী বছর পদ্মা সেতু হয়ে বেনাপোল-ঢাকা ট্রেন চলাচল করবে। ২০০১ সালের জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের শেষের দিকে। শুরুর পর এক দিনের জন্যও থামেনি সেতু নির্মাণের কাজ। ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বানানো সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। মূল সেতুর কাজ করেছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।