মোঃ রনি আলি, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিবগঞ্জ উপজেলার বাণিজ্য কেন্দ্র কানসাটে গঙ্গা আশ্রম এবং শ্মশানঘাট অবস্থিত।
এ গঙ্গাঘাটটিতে দেশের সকল সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি জাতীয় তীর্থভূমি হিসেবে পরিচিত। এখানে প্রতি বছর গঙ্গা দশহারা তিথী অনুযায়ী জ্যৈষ্ঠ বা আষাঢ় মাসে সর্ববৃহৎ গঙ্গা স্নান অনুষ্ঠিত হয়। স্নান ছাড়াও নদীর তীরে পুজো, প্রার্থনা, গীতাপাঠ এবং কীর্তন সহ বিভিন্ন সনাতন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
কানসাট গঙ্গা আশ্রম কমিটি এই স্নান উৎসবের আয়োজন করেন। গঙ্গা স্নানকে ঘিরে কানসাট এলাকায় সনাতন সম্প্রদায়ের মিলন মেলায় পরিনত হয়।
এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৩০ মে) ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দঃ কানসাটে পদ্মার শাখা পাগলা নদীর তীরে সারা বাংলাদেশের প্রায় অর্ধ লক্ষ সনাতন ধর্মাবলম্বী একত্রিত হয়ে গঙ্গা স্নান করে গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন নিজেদের দশ রকম পাপ বিনাসের জন্য।
এছাড়াও তারা এখানে এসে মৃত স্বজনদের অস্তি-বিসর্জন দিয়েছেন।
গঙ্গাস্নান কমিটির সভাপতি শ্রী সুবোধ দত্ত জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আজ মঙ্গলবার এই গঙ্গা স্নান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় অর্ধ-লক্ষ সনাতন ধর্মালম্বীরা এখানে এসে তাদের ধর্মীয় আচার পালন শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন,আমরা কানসাটে এই পাগলা নদীতে স্নান করে নিজেদের জীবনে জমে থাকা দশ রকম পাপকে বিসর্জন দেই। আমাদের পূর্ব পুরুষদের কাল থেকে এখানে এই স্নান উপলক্ষে স্নান মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আমরা তাদের সৃতি ধরে রাখার চেষ্টা করছি। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভক্তি সহকারে এই দিনটি পালন করেন।
এইদিকে শিবগঞ্জ উপজেলা পুজা উর্যাপন কমিটির সভাপতি ও শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, কুনাল মুর্খার্জী বলেন, এই দশহারা গঙ্গা স্নানের মাধ্যমে আমরা আমাদের পাপকে ধুয়ে মুছে পরিস্কার করি, এই গঙ্গা স্নান ও মেলা আমাদের বাপ,দাদা পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য, সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছর এই গঙ্গা স্নানের আয়োজন করা হয়ে থাকে এবং এই গঙ্গা স্নানে সারা বাংলাদেশের প্রায় অর্ধ লক্ষ সনাতন ধর্মাবলম্বী একত্রিত হয়ে থাকে।
স্নান অনুষ্ঠানকে ঘিরে, পাগলা নদীর তীরে, বসেছে গ্রামীণ মেলা। মেলায় রয়েছে বিভিন্ন প্রসাধনী, কাঠের আসবাবপত্র, মাটির তৈরি জিনিসপত্র, সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন উপকরণ, খেলনা ও খাবারের দোকান। উৎসবকে ঘিরে চলছে কীর্তন ও ভজন গীতি।