কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৪ পাসপোর্ট দালালকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, ডেলিভারি স্লিপ, জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল ফোন, বিভিন্ন সিল, প্যাড, নগদ অর্থসহ পাসপোর্ট সংক্রান্ত নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে।
রোববার (৫ মার্চ) দিনব্যাপী কুমিল্লা সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় র্যাবের বিশেষ এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- কুমিল্লা নগরের শাকতলা গ্রামের শাকিল আহম্মেদ সুজন (৩৮), বাগিচাগাঁও এলাকার মো. শাহাদাত হোসেন (২৭), নোয়াপাড়া গ্রামের মো. শরীফ (৩৪), মো. মাসুক (৫০), একই এলাকার মো. লিকন খান লিটন (২০), একই গ্রামের ডালিম সরকার (২০), একই গ্রামের মো. ইরফান (২৮), একই গ্রামের মো. শওকত আলী শওকত আকবর (৫৪), একই এলাকার মো. ওজায়ের হোসেন সাকিব (২০), নতুন চৌধুরী পাড়ার মো. দেলোয়ার হোসেন রোমান (৫২), মুরাদনগর থানার কুরুইল গ্রামের আব্দুর রহিম (৩৭), মোরাপাড়া গ্রামের ইশান আহম্মেদ রাব্বি (২৩), চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানার মগধারা গ্রামের মুজিবুর রহমান (২১), বুড়িচং পীর যাত্রাপুর গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (২০), একই জেলার কোতয়ালি মডেল থানার মো. শাফি (২৯), একই গ্রামের মো. তুহিন (২০), খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা থানার ব্রিজপাড়া গ্রামের মো. রুহুল আমিন রুবেল (৩০), ছোটরা গ্রামের মো. মাজহারুল ইসলাম (২১), বুড়িচংপয়াত গ্রামের আব্দুল হান্নান বাবুল (৫৩), একই গ্রামের হাছিবুল হাসান জিমি (২৩), শিকারপুরের তানজিদ হাসান (২৭), একই জেলার দেবিদ্বার ওয়াহেদপুর গ্রামের মো. ইমরুল হাসান ওরফে ইমরুল (৪০), বুড়িচং পীর যাত্রাপুর গ্রামের মো. আবুল কালাম আজাদ (৫৫) ও কুমিল্লা সদরের কালিকাপুর গ্রামের মো. আব্দুল কাইয়ুম (৫২)।
র্যাব-১১ এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, কুমিল্লা পাসপোর্ট অফিসকে ঘিরে দালাল চক্র তিনটি গ্রুপে সক্রিয়। তারা পাসপোর্ট তৈরিতে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, সময় মতো না দেওয়া ইত্যাদি অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে বিশেষ অভিযান চালানো হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা সবাই পাসপোর্ট দালাল চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা দীর্ঘদিন ধরে পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত রেটের বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল।
মেজর সাকিব জানান, মূলত তারা তিনটি গ্রুপে এই কার্যক্রম পরিচালনা করে। যার একটি গ্রুপ সাধারণ মানুষকে সহজভাবে পাসপোর্ট তৈরি করার নাম করে বিভিন্ন এজেন্টের কাছে নিয়ে আসে। এই এজেন্টের গ্রুপ ভুক্তভোগীদের অনলাইন আবেদন ও ব্যাংক ড্রাফট করে দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুতসময়ে পাসপোর্ট দেবে বলে ডেলিভারি স্লিপ নিজেদের কাছে রেখে দেয়। অপর গ্রুপ বিভিন্ন কৌশলে পাসপোর্ট ডেলিভারি করার নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করে। এভাবেই তাদের কাছে টাকা জমা দিলে তারা বিভিন্নভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জালিয়াতি মাধ্যমে প্রস্তুত করে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।