বুধবার থেকে রেলের টিকেট ব্যবস্থাপনায় আসছে বড় পরিবর্তন। অনলাইনে ও কাউন্টারে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করে কাটতে হবে রেলের টিকেট। অপ্রাপ্ত বয়স্করা জন্মনিবন্ধন সনদ কিংবা অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবে।
একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে এতদিন একজন যাত্রী রেলের চারটি কাটতে পারতেন। এতে সুযোগ পাচ্ছিলো কালোবাজারিরা। সেই টিকেট তারা চড়া দামে বিক্রি করতো।
এই অনিয়ম বন্ধে এবার পহেলা মার্চ থেকে অনলাইন ও কাউন্টারে ট্রেনের টিকেট কাটতে বারো বছর বয়সের বেশি বয়সী সব যাত্রীকে জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। রেলওয়ের ওয়েবসাইট ও রেল সেবা অ্যাপেও নিবন্ধন করা যাবে।
করা যাবে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমেও। কমলাপুরসহ দেশের সব বড় রেল স্টেশনে নিবন্ধনের জন্য বসানো হয়েছে হেল্প ডেস্ক। সেখানে সহজেই নিবন্ধন করছেন যাত্রীরা। বলছেন এই উদ্যোগ কার্যকর হলে বন্ধ হবে টিকেট কালোবাজারি।
টিকেট কালোবাজারি ও অনিয়ম ঠেকাতে রেলের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন যাত্রীরা। ভ্রমণের সময়ও যাত্রীদের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ বা ছবিযুক্ত পরিচয়পত্রের ফটোকপি রাখতে হবে। যাত্রাপথে চেকাররা যাতে টিকিটের সঙ্গে এনআইডি মেলাতে পারেন। না মিললে যাত্রীকে মুখোমুখি হতে হবে জরিমানার।
টিকেট যাচাইর জন্য পহেলা মার্চ থেকেই ট্রেনের টিটির হাতে থাকবে বিশেষ মেশিন। এনআইডি দিয়ে ট্রেনের টিকেটের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে কেনা টিকিট অনলাইনেই ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা রেখে সাত শর্তে টিকিট বিক্রি শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
ট্রেনের টিকেটের জন্য সাত শর্ত :
১. ১২-১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা পিতা বা মাতার নাম ও এনআইডি দ্বারা নিবন্ধন করা রেলওয়ে অ্যাকাউন্ট অথবা জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে এবং জন্মনিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন করা অ্যাকাউন্ট দিয়ে আলাদা বা এককভাবে টিকেট কিনতে পারবে। এসব ক্ষেত্রে টিকেটের ওপরে মুদ্রিত নামের সঙ্গে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণের সময় বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
২. বিদেশি নাগরিকেরা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে এবং পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।
৩. সফলভাবে এনআইডি/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন ব্যতীত কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন না।
৪. ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট অথবা ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে।
৫. পরিচয়পত্রের সঙ্গে টিকিটে থাকা যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৬. যাত্রীরা ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন/পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের সিস্টেমে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে পারবেন।
৭. দেশের বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন ও আন্তঃনগর ট্রেনের স্টেশনসমূহে সর্বসাধারণের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য একটি করে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে।
